তিন দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের প্রাথমিক শিক্ষকদের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু
প্রকাশিত : ১২:১৭, ২৬ মে ২০২৫ | আপডেট: ১২:১৯, ২৬ মে ২০২৫

তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ সোমবার (২৬ মে) থেকে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে গিয়েছেন। এর অর্থ, তারা নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও কোনো শ্রেণি কার্যক্রম বা পরীক্ষা গ্রহণে অংশ নিচ্ছেন না। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি মানা না হলে এই কর্মসূচি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।
এ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’, যেখানে দেশের ছয়টি সহকারী শিক্ষক সংগঠন একত্রিত হয়েছে। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই তারা বেতন বৈষম্য ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে অসংগতি নিয়ে আন্দোলন করে আসছেন, কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা / তারেক-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি মঙ্গলবার
শিক্ষকদের প্রধান তিন দফা দাবি:
১. সহকারী শিক্ষক পদকে অ্যান্ট্রি পদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ।
২. ১০ এবং ১৬ বছর পূর্ণ হওয়ার পর উচ্চতর গ্রেডে যাওয়ার জটিলতা নিরসন।
৩. প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতি এবং দ্রুত পদোন্নতির সুযোগ নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে বেতন পান, যেখানে সহকারী শিক্ষকরা রয়েছেন ১৩তম গ্রেডে। নতুন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষকরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দাবি করছেন— সহকারী শিক্ষকদের শুরুর বেতন হতে হবে ১১তম গ্রেডেই।
ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, "৫ মে থেকে প্রতীকী কর্মবিরতি দিয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করি। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে আজ পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে গিয়েছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তবে আলোচনার পথ আমরা খোলা রেখেছি।"
এর আগে কর্মসূচির অংশ হিসেবে:
৫ মে থেকে: এক ঘণ্টার প্রতীকী কর্মবিরতি
১৬–২০ মে: দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি
২১–২৫ মে: অর্ধদিবস কর্মবিরতি
২৬ মে থেকে: পূর্ণদিবস কর্মবিরতি (অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত)
সারাদেশে প্রভাব:
বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজারেরও বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার শিক্ষক কর্মরত। এর মধ্যে সহকারী শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ। ফলে তাদের এই কর্মবিরতির কারণে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিক্ষকদের দাবির প্রেক্ষিতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমদের নেতৃত্বে একটি কনসালটেশন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সুপারিশ ও আদালতের একটি রায়ের আলোকে নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব তৈরি হয়েছে। তবে শিক্ষক সংগঠনগুলো বলছে, এই প্রস্তাব বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং এতে শিক্ষকদের ন্যায্যতা উপেক্ষা করা হয়েছে।
এসএস//
আরও পড়ুন