ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪

অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় শাহাদাতের শাস্তি: নান্নু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৫৭, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

জাতীয় লীগে খেলা চলাকালীন সতীর্থ খেলোয়াড়কে পেটানোর দায়ে বিসিবি কর্তৃক সদ্য পাঁচ বছর নিষিদ্ধ হওয়া জাতীয় দলের এক সময়ের নিয়মিত পেসার শাহাদাত হোসেন রাজীবের শাস্তি অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) কমিটির সভায় সতীর্থ খেলোয়াড় জুনিয়র আরাফাত সানিকে মারধরের ঘটনায় আম্পায়ার ও রেফারির দেয়া প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শাহাদাতকে পাঁচ বছরের জন্য সবধরনের ক্রিকেট থেকে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। বিসিবির এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আগামী ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত আপিল করতে পারবেন তিনি।

সভা শেষে গণমাধ্যমকে নান্নু বলেন, আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারির দেয়া প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করে আমরা শাহাদাতকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছি। তবে দুই বছর শাস্তি স্থগিত করা হয়েছে। 

এর মধ্যে প্রথম তিন বছর তিনি বিসিবির অধীনে কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবেন না। পরের দুই বছর তিনি কড়া নজরদারিতে থাকবেন। কোনো রকম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে পুরো ৫ বছর তাকে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হবে। 

তিনি বলেন, খেলা চলাকালীন সতীর্থ বা অন্য কারো গায়ে হাত তোলা আচরণবিধির লেভেল-৪ ভঙ্গ করার অপরাধ। এই ধারা ভঙ্গ করলে সর্বনিম্ন ১ বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত নিষিদ্ধ করার বিধান রয়েছে।

গত রোববার ঢাকা ও খুলনা বিভাগের মধ্যকার ম্যাচে বল ঘষা নিয়ে এ মারধরের ঘটনার সূত্রপাত। ওই সময় ঢাকার পেসার মোহাম্মদ শহীদ ছিলেন বোলার। ফিল্ডার আরাফাত সানি ফিল্ডিং করছিলেন মিড অফে। শাহাদাত ছিলেন মিড অনে। বোলারের হাতে বল দেয়ার আগে রাজিব সতীর্থ ক্রিকেটার আরাফাত সানিকে বলেন, ভালো মতো বলটা ঘষে দিতে যাতে ঔজ্জ্বল্য ঠিক থাকে।

কিন্তু আরাফাত সানি তা করতে অস্বীকৃতি জানান। তখন শাহাদাত এগিয়ে গিয়ে আরাফাত সানির কাছে জানতে চান, কেন বল ঘষে দেবে না? এ নিয়ে উভয়ের মাঝে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আরাফাত সানিকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন তিনি। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে লাথিও মারেন।
 
পরে অন্যান্য সতীর্থদের সহযোগীতায় তাৎক্ষণিকভাবে মিমাংসা হয়। তবে ঘটনার পর ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ একটি প্রতিবেদন জমা দেন বিসিবিতে। যেখানে শাহাদাতের অপরাধকে আইসিসি ‘লেভেল-৪’ পর্যায়ের বলে উল্লেখ করা হয়। 

কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘শাহাদাতের কিন্তু আগেও শৃঙ্খলাভঙ্গের ইতিহাস ছিল, সেটাকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। মাঠের মধ্যে সতীর্থের গায়ে হাত তোলা, এটা তো গুরুতর অপরাধ। টেকনিক্যাল কমিটির সবাই তার এই শাস্তির ব্যাপারে একমত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আশা, অন্য ক্রিকেটারদের জন্যও এটা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই এটা একটা খারাপ ব্যাপার যে, সে বারবার এরকম অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়াচ্ছে। শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, এই বার্তাটা আমরা সবাইকে দিতে চাই।’

এদিকে নিজের দোষ স্বীকার করে শাহাদাত বলেছেন, এটা সত্যি আমি নিজের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারিনি। তবে সানি আমার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছে। যা আমার পক্ষে হজম করা কঠিন ছিল।

বাংলাদেশের হয়ে ৩৮ টেস্ট, ৫১ ওয়ানডে ও ছয়টি টি২০ খেলেছেন শাহাদাত। সবশেষ জাতীয় দলে খেলেছেন ২০১৫ সালে।

অতীতেও নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়েছেন শাহাদাত। গত বছর রাজধানীর আসাদগেটে তার গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগায় এক সিএনজি ড্রাইভারের গায়ে হাত তোলেন তিনি। এর আগে ২০১৫ সালে গৃহকর্মীকে নির্যাতনের দায়ে সস্ত্রীক জেলও খাটেন নারায়ণগঞ্জের এই পেসার।

এআই/এসি
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি