ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

কাশ্মীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে মোদীকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৩২, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে মোদী সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ওই অঞ্চলের জন্য গ্রহণ করা সব পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ভারতের জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় নিতেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এর নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেন।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনায় বলা হয়, আমরা জম্মু-কাশ্মীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে সম্ভাব্য সব ধরনের প্রচেষ্টা নিতে নির্দেশনা দিচ্ছি। জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে সুনির্দিষ্ট উপায়ে পরিস্থিতি আগের অবস্থায় ফেরানো হোক, এমনটাই চাইছি আমরা। কাশ্মীরের নিষেধাজ্ঞাগুলোর নিষ্পত্তি সেখানকার হাই কোর্টের মাধ্যমে করা যেতে পারে বলেও বিচারকরা মন্তব্য করেছেন।

বর্ষীয়ান আইনজীবী হাফেজা আহমদী বলেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি এমনই যে সেখানে হাইকোর্টে মামলা করার মতো পরিস্থিতিও নেই। তাই সেখানকার শিশুদের ঘরবন্দি রাখার অভিযোগ তুলে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাইকোর্টে না গিয়ে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। এর পরই প্রধান বিচারপতি বলেন, মানুষ যা বলছে, কাশ্মীরের পরিস্থিতি সে রকম ভয়াবহ হলে আমি শ্রীনগর যাবো। প্রয়োজনে আমি জম্মু ও কাশ্মীরের হাইকোর্টে গিয়ে সেখানে কাজকর্ম কেমন চলছে, তা দেখব। তবে অভিযোগ মিথ্যে হলে তার ফল ভোগ করতে হবে— এই ভাষায় আইনজীবী আহমদীকে সাবধান করে দেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি বলেন, সত্যি যদি কাশ্মীরের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়। তাহলে এই সংক্রান্ত মামলা জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টে দাখিল করতে হবে এর জবাবে বৃন্দা গ্রোভার জানান, জম্মু ও কাশ্মীরে ইন্টারনেট ও সরকারি পরিবহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই সেখানকার বাসিন্দাদের পক্ষে জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে।

এরপরই শুরু হয় শিশু অধিকার কর্মী এণাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় ও অধ্যাপক শান্ত সিনহার দায়ের করা মামলার শুনানি। তাঁরা উল্লেখ করেন, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকেই অবৈধভাবে শিশুদের আটকে রাখা হচ্ছে। ১৮ বছরের নিচে থাকা নাবালক যাদের আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। 

এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানান, এই বিষয়ে মামলা দায়ের করতে হলে তা যেন জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টে জানানো হয়। 

তবে শিশু অধিকার কর্মীদের আইনজীবী জানান, কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য তাঁর মক্কেলরা হাইকোর্টে যেতে পারছেন না। এই কথা শুনেই কাশ্মীর যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।

এসব ব্যাপারে কেন্দ্রের বক্তব্য, পরিস্থিতি ততটা খারাপ নয়। বরং আগের চেয়ে আরও অনেক ভাল। যুক্তি সাজাতে গত তিন দশকের তথ্য পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। ১৯৯০ সালের পর থেকে উপত্যকায় মোট ১৪০০০ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। ৫০০০ সেনা ও ১৪০০০ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিকেশ করা হয়েছে ২২ হাজার জঙ্গিকে। কেন্দ্রের যুক্তি, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর সেখানে একটি গুলিও ছুড়তে হয়নি পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনীকে।

তবে প্রধান বিচারপতি হুঁশিয়ারি দেন, জাতীয় স্বার্থের কথা কেন্দ্র যেন ভুলে যা যায়। উপত্যকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে প্রতিটি পদক্ষেপ যেন সংবিধান মেনে করা হয়।

টিআই/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি