ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

চুক্তিপত্রে ধর্ষণ নিয়ে স্বীকারোক্তি: ফেঁসে যাচ্ছেন রোনালদো

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:০০, ১০ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ১৮:১৮, ১০ অক্টোবর ২০১৮

মার্কিন মায়োরগার সঙ্গে একটি নাইটক্লাবে অন্তরঙ্গ সিআর সেভেন

মার্কিন মায়োরগার সঙ্গে একটি নাইটক্লাবে অন্তরঙ্গ সিআর সেভেন

সময়টা ভালো যাচ্ছে না পতুর্গিজ তারকা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতার পর দলবদল। দীর্ঘদিন ধরে খেলা প্রিয় দল রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে যোগ দিয়েছেন জুভেন্টাসে। এর মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে উঠে এসেছে মার্কিন এক মডেলের ধর্ষণের অভিযোগ।

এই অভিযোগের যখন তদন্ত শুরু তখন আরো তিন তরুণী একই অভিযোগ এনেছেন সিআর সেভেনের বিরুদ্ধে। বলা চলে শনির দশা পেয়ে বসেছে রোনালদোকে।

ডার স্পিগে নামে জার্মানের সংবাদমাধ্যমটি এক সপ্তাহ আগ ৯ বছর আগে সুপারস্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ধর্ষণের কুকীর্তির কথা ফাঁস করেছিল। সেই থেকে রোনালদো অস্বীকার করে আসছিলেন। তার ভক্তরাও এটা বিশ্বাস করছিল না। কিন্তু ডার স্পিগেল এবার ধর্ষণ আড়াল করতে রোনালদোর সেই গোপন চুক্তিপত্র ফাঁস করে দিল! কী আছে সেই চুক্তিপত্রে?

আরো পড়ুন : রোনালদোর বিরুদ্ধে আরো তিন তরুণীর ধর্ষণের অভিযোগ!

চুক্তিপত্রে দুই পক্ষের আইনজীবী জেরা করেছেন অভিযুক্ত রোনালদো এবং অভিযোগকারী ক্যাথরিন মায়োরগাকে। রোনালদোকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, `যখন ঘটনাটি ঘটে, তখন কি কোনো জোর করা হয়েছিল? তুমি মিস. সিকে (মায়োরগার ছদ্মনাম) জাপটে ধরেছিলে? কিংবা তার সঙ্গে বিকৃত যৌন আচরণ করেছিলে?`

জবাবে রোনালদো বলেন, `ঘটনার বর্ননায় লেখা আছে, দেখে নিন।` উল্লেখ্য, রোনালদোর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক `অ্যানাল সেক্স` করার অভিযোগ ডার স্পিগেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে উল্লেখ করেছিলেন মায়োরগা।

রোনালদোকে প্রশ্ন করা হয়, `যখন যৌনমিলনের ঘটনা ঘটেছিল, তখন কি তোমরা বিছানায় শুয়েছিলে নাকি মেঝেতে শুয়েছিলে? দাঁড়িয়ে কিংবা অন্য কোনো পজিশনে কি তোমরা যৌনমিলন করেছিলে?`

এবারও ছোট করে জবাব দিয়ে রোনালদো বলেন, `আমরা বিছানায় শুয়ে ছিলাম।`

প্রশ্ন : ধর্ষণের সময় মিস সি কি চিৎকার করেছিল? সে কি আর্তনাদ করেনি?

রোনালদোর জবাব, `সে বার বার আমাকে `না` `না` এবং `এটা এখনই বন্ধ কর` বলছিল।`

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের এই ধর্ষণের ঘটনার পরের দিন পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন ক্যাথরিন মায়োরগা। এরপর রোনালদো তার উকিলের মাধ্যমে আপোষের প্রস্তাব পাঠায়।

২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ডলারের বিনিময়ে মায়োরগা এই আপোষনামায় সাক্ষর করেন। এতে লেখা ছিল, মায়োরগা কখনই এই ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে পারবে না এবং কোনো আইনী পদক্ষেপ নিতে পারবে না।

তবে ধর্ষণের সময় যা ঘটেছিল, মায়োরগা তার আইনজীবিকে দিয়ে সেই চুক্তিপত্রে রোনালদোর স্বীকারোক্তি নিয়ে রাখেন। যা এই মুহূর্তে রোনালদোর বিরুদ্ধে মায়োরগার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হতে যাচ্ছে! উল্লেখ্য, `মি টু` আন্দোলনে উদ্বদ্ধ হয়ে সম্প্রতি মায়োরগা ৯ বছর আগের সেই আপোষনামার শর্ত ভঙ্গ করেন।

আররও পড়ুন : রোনালদোর ধর্ষণ: সেদিন কী হয়েছিল, জানালেন মার্কিন তরুণী

মায়োরগা অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে রোনালদো পরিচয় হয় এক বিখ্যাত নাইটক্লাবে। তখন মায়োরগা ওই নাইটক্লাবে চাকরি করতেন। ২০০৯-এ  রোনালদো সেই সময় ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েছেন।

সে যাই হোক, একটা সময়ের পর সেই নাইটক্লাবে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। একপর্যায়ে তাঁকে নিজের হোটেলের ঘরে আসার আমন্ত্রণ জানান সিআরসেভেন। আমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েই মহাবিপদে পড়েন মায়োরগা।

দ্য গার্ডিয়ান-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মায়োরগা বলেছেন, `রোনালদো আমাকে ওঁর গোপনাঙ্গ ৩০ সেকেন্ডের জন্য ধরতে বলে। আমি প্রথম হেসে উড়িয়ে দেই। বলি, তুমি নিশ্চয়ই মজা করছ! রোনাল্ডোর যৌন আবেদনে অনেকে মুগ্ধ। কিন্তু তখন ওঁর ভিতরে থাকা নোংরা মানুষটার পরিচয় পাই।

মায়োরগা বলেন, ও (রোনালদো) আমাকে অ্যানাল সেক্সের প্রস্তাব দেয়! বিপদ বুঝতে পেরে ছাড়া পাওয়ার আশায় আমি বড়জোর চুম্বনে রাজি হই। কিন্তু সে আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। আমাকে হোটেল রুমে আটকে রাখে ও। একপর্যায়ে জোর করে আমার সঙ্গে সে বিকৃত যৌনতা শুরু করে।

আমি ওর কাছে অনুরোধ করি। কিন্তু ও তখন কোনও কিছু শোনার মতো অবস্থায় ছিল না। ও যেন মত্ত হয়ে উঠেছিল। নির্যাতনের পরও ও আমাকে রুম থেকে বেরোতে দিচ্ছিল না। শেষে অনেক কষ্টে বেরিয়ে আসি। পরদিন থানায় গিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানাই।

অবশ্য এবারই প্রথম নয়। বছর দেড়েক আগে এই ম্যাগাজিন আরও একবার মায়োরগার পক্ষ থেকে রোনালদোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলে। সেবারও সে অভিযোগ ধোপে টেকেনি। আবারও সেই একই অভিযোগ তোলায় রোনালদোর আইনজীবী ম্যাগাজিনের বিপক্ষে আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

/ এআর /


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি