ঢাকা, মঙ্গলবার   ০১ জুলাই ২০২৫

পদ্মা ব্যাংকের একীভূতকরণের আবেদন বিবেচনা করা হবে: অর্থমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৪৫, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

Ekushey Television Ltd.

দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে পদ্মা ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত যেকোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে আবেদন জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, সংসদে অনুমোদনের পর একীভূত করা হবে।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বেসরকারি খাতের পদ্মা ব্যাংক রাষ্ট্রীয় যেকোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।  আর্থিক কেলেঙ্কারির জন্য বিতর্কিত ফারমার্স ব্যাংক থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা ব্যাংক নামে আত্মপ্রকাশ করে ব্যাংকটি।

অর্থ মন্ত্রণলায়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে (এফডিআই) এর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পদ্মা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি এফআইডি-এ  একীভূতকরণের জন্য একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে। প্রস্তাবে পদ্মা ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের বেশকিছু আর্থিক কেলেঙ্কারির সংকট কাটিয়ে ওঠার পর পদ্মা ব্যাংক এখন ভালো ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।  এটি এখন আর্থিকভাবে শক্তিশালী ব্যাংক। যদি এ ব্যাংক অন্য কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হয়, তাহলে ব্যাংকটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ যদি পদ্মা ব্যাংককে অন্য কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করে তাহলে এটি হবে এ ধরনের দ্বিতীয় ঘটনা।  প্রায় এক যুগ আগে (২০০৯) বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থাকে একীভূত করে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল)।  এছাড়া, সমস্যা জর্জরিত বেসিক ব্যাংক বিডিবিএল-এর সঙ্গে একীভূত হতে পারে বলেও আলোচনা চলছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকগুলো মার্জ হবে, সেগুলো মোটামুটি ড্রাফট স্টেজে আছে।  আমাদের ড্রাফট হয়ে গেছে, সেটিকে আমরা সংসদে নিয়ে আসবো এবং সেখানে অনুমোদন হওয়ার পর মার্জের কার্যক্রম শুরু হবে।’

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের একীভূতের প্রস্তাব  প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মার্জ হওয়ার বিষয়ে আমি এখনো কোনো আবেদন পাইনি। পদ্মা ব্যাংক সম্পর্কে একটি বিষয় আপনাদের অবশ্যই জানা আছে, সেটি হলো ব্যাংকটির বর্তমান ওনারশিপ স্ট্রাকচারে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সবগুলোই জড়িত।  তার মধ্যে সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, জনতা সবগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকেরই শেয়ার আছে। সেভাবেই ব্যাংকটি পরিচালিত হচ্ছে।  সেখানে যে বোর্ড রয়েছে, জনতা, সোনালী, রূপালী, অগ্রণী ব্যাংকও আছে।  অফকোর্স আমরা এ প্রস্তাব বিবেচনা করতে পারি।  আইনটি আগে হতে হবে, যার পরিপ্রেক্ষিতে এটি হবে।’

তিনি বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, তারা ব্যাংকটি ভালোভাবে চালাতে পারেননি।  সেখানে অনেক দুর্নীতি হয়েছে আপনারা জানেন, আমরাও শুনেছি। কীভাবে দুর্নীতিতে জড়িত হয়েছে, সেটা এখনো আমরা জানতে পারিনি। কারণ যারা অন্যায় করেছে, দুর্নীতি করেছে, তার প্রাইমারিলি স্টেটমেন্ট ছিল। সেটির ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া চলছে এবং তারা এখন জেলে আছে।’
 
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘যারা অন্যায়-অপরাধ করবে, তাদের বিরুদ্ধে যে আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে আমরা তাদের সেই আইনের আওতায় এনেছি এবং তারা জেলে আছে। ব্যাংকটিতে যারা শেয়ারহোল্ডার, যারা ঋণগ্রহীতা বা ডিপোজিট রেখেছে, সেটিও আমাদের দেখতে হবে।  ব্যাংকটি যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, চলমান রাখার জন্যই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছে।’

পদ্মা ব্যাংকের ফান্ড রাইজের দায়িত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে বা আমি নিজে এমন কোনো আবেদন এখনো পাইনি।  পত্র-পত্রিকায় যা এসেছে, সেটা আমরা দেখেছি।  সবাই তো চেষ্টা করতে পারে বিদেশ থেকে টাকা আনার জন্য। কিন্তু বিদেশিরা যদি পদ্মা ব্যাংকের ব্যালেন্সশিট দেখে মনে করে, বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত, তারা বিনিয়োগ করবে।  পদ্মা ব্যাংকে এমন কোনো রেস্ট্রিকশন নেই, যে পারবে না।  তবে তাদের কমপ্লায়েন্স থাকতে হবে।’

সোলার পাওয়ারের কন্ট্রাক্ট পানামাকে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পানামা নামের একটি দেশ আছে, এটি সেই পানামা।  যে প্রতিষ্ঠান নিয়ে কন্ট্রোভার্সি, সেটি পানাম, পানামা নয়।  আমার মনে হয়, পানাম নামের কোম্পানিটি বিতর্কিত, সেটি আমরা জানি। তাই আমরা সাবধানতা অবলম্বন করি।’
 
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পানামা পেপারস, যেখানে অনেকের টাকা ছিল, যা আপনারা পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন, আমরাও দেখেছি। সেখানে ডিটেইলে গিয়ে এমন কিছু আমরা পাইনি।  পানাম পেপারস আর পানামা এক না। হতে পারে এটা ভিন্ন কোম্পানি। সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টটিতে সরকারের কোনো বিনিয়োগ নেই।  এখানে তাদের সঙ্গে যে চুক্তি তা হলো, তারা পাওয়ার প্রডিউস করবে, তারপর সরকার তা কিনে নেবে। পুরো বিনিয়োগটা জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি। সরকার এখানে ফাইন্যান্স করছে না।’

আরকে//
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি