ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

একজন মমিনুল ও টেস্ট ক্রিকেট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:০৭, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১২:৩৮, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

চট্টগ্রামে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ড্রয়ের নায়ক কে সেটি আর নতুন করে বলার কিছু নাই। প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচ বাচানো ১০৫ রান মমিনুলকে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে একটি ম্যাচের টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করে নিজের সাফল্যের মুকুটে যুক্ত করেছেন আরো একটি পালক।


এই দুই সেঞ্চুরির মধ্যে ম্যাচ বাঁচানোর জন্য দুটিই সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রান না হলে বাংলাদেশের রান যেমন পাঁচশতকের ঘর পেরোনো সম্ভব হতো না তেমনি দ্বিতীয় ইনিংসের সেঞ্চুরি না হলেও ম্যাচ ও বাচানো যেতো না। তবে মমিনুল এগিয়ে রাখছেন দ্বিতীয় ইনিংসের সেঞ্চুরিকে। চতুর্থ দিনে ৮১ রানে ৩ উইকেট পতনের পর বাংলাদেশের পরাজয়টাকে সবাই সময়ের ব্যাপার হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু ক্রিকেট বোদ্ধাদের শঙ্কাকে ভুল প্রমাণিত করে লিটন দাসকে সাথে নিয়ে একাই লড়াই করলেন মমিনুল হক সৌরভ। সফলও হলেন। দিন শেষে সম্মানের ড্র নিয়েই হোটেলে ফিরল মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।


অথচ অনেকটা একতরফাভাবে মমিনুলের গায়ে টেস্ট ক্রিকেটারের তকমা লাগিয়ে টেস্ট দল থেকেই ছেটে ফেলা হয়েছিল বাংলাদেশের এই লিটল মাস্টারকে। গেল বছর দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে টেস্ট দলে জায়গা হয়নি মমিনুল হকের। টাইগারদের তৎকালীন কোচ হাথুরুসিংহে মমিনুলের জন্য ঢাল হিসেবে ব্যবহার করলেন তার দুর্বল গড়কে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে দলের একজন ক্রিকেটার যদি অফ ফর্মে থাকেন তাকে ফর্মে আনার দায়িত্বটা আসলে কার উপর বর্তায়। সেই প্রশ্নের জবাব আসলে হাথুরুকে কখনো দিতেই হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে শেষ পর্যন্ত দেশের মিডিয়া ও ক্রিকেট প্রেমীদের সমালোচনার চাপে বিসিবি মমিনুলকে দলভুক্ত করে। তাতে অবশ্য খুশি হননি হাথুরু সিংহে। তার বিদায়ের দামামাটা আসলে বেজে উঠে সেই মুহুর্ত থেকে। দক্ষিণ আফ্রিকার মত কঠিন সিরিজে নিজেকে মেলে ধরেছেন এই বা হাতি মাস্টার ব্লাস্টার। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেই একটি হাফ সেঞ্চুরি সহ ৭৭ রান করেছিলেন মমিনুল।


সময়ের স্রোতে হাথুরুসিংহে এখন শ্রীলংকা দলের কোচ। ত্রিদেশীয় সিরিজে মমিনুলের জায়গা না হলেও টেস্টে ঠিকই ছিলেন এই বা হাতি ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের পাশাপাশি ভালো কিছু করার জন্য নিজের প্রতিও চ্যালেঞ্জটা মমিনুলের। কারণ প্রতিপক্ষের কোচ যে ছিলেন তারই দলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক। যার কাছ থেকে সুবিচার পান নি তিনি। মমিনুলের মধ্যে যে চাপা ক্ষোভের পরিমাণটা কত ছিল সেটি বোঝা যায় তার প্রথম ইনিংসের শতকের পর উদযাপনটা দেখলেই। যদিও মমিনুল বাস্তবে সেটি স্বীকার করেন নি। তিনি স্বীকার না করলেও সেটি যে হাথুরুসিংহের প্রতিই জবাব ছিল সেটি বুঝতে কারো কষ্ট হয়নি। যাই হোক হাথুরুসিংহে বাংলাদেশ দলের জন্য এখন অতীত। নিজেকে একজন টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে ইতিমধ্যে প্রমাণ করা মমিনুল তার যোগ্যতা অনুযায়ী বাকি ফরম্যাটের ক্রিকেটেও সুযোগ পাবেন সেটি আশা করা খুব অন্যায় হবে না। জয়তু মমিনুল, জয়তু বাংলাদেশের ক্রিকেট।

টিকে


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি