ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪

জয়ের জন্য প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১০:২৭, ২ জুন ২০১৯ | আপডেট: ১৩:৪৫, ২ জুন ২০১৯

বিশ্বকাপের ১২তম আসরের পর্দা উঠেছে ৩০ মে। এ আসরে প্রথম ম্যাচে আজ (২জুন) বাংলাদেশ লড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এবারের আসরে বাংলাদেশ দল জয়ের ব্যপারে খুবই আত্মবিশ্বাসী। নতুন ইতিহাস গড়ার প্রত্যয় নিয়ে খেলতে চায় তারা।

টাইগার বাহিনীর জয়ের ব্যপারে দেশের মানুষও খুব আশাবাদী। তাই আজ ১৬ কোটি মানুষের চোখ থাকবে ওভালের দিকে। লন্ডনের কেনিংটন ওভালে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৩টায়। এদিকে আগের দিন অনুশীলনে হাতে চোট পেলেও এখন শঙ্কামুক্ত আছেন তামিম ইকবাল।

চারবার বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া অভিজ্ঞ টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা দলকে নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

মাশরাফি বলেন, ‘খুব সম্ভবত আমাদের এই দলটি এখন পর্যন্ত সেরা দল। দলের ভারসাম্য দারুণ। আমাদের কিছু তরুণ ভালো খেলয়োড় রয়েছে। তাদের নিয়ে অনেক আশাবাদী।’

নড়াইল এক্সপ্রেস বলেন, ‘আমাদের দলে সিনিয়র-জুনিয়র খেলোয়াড়ের মিশ্রন রয়েছে। তারা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ক্রিকেট খেলছে। পারফরম্যান্সও দুর্দান্ত। কদিন আগেই আমরা আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জিতেছি। তাই বিশ্বকাপে আমরা আরও আত্মবিশ্বাসী।’

টাইগারদের অধিনায়ক জানান, গত চার বছরে বাংলাদেশ আগের যে কোনও সময়ের চেয়ে বেশি উন্নতি করেছে।

তিনি বলেন, ‘আজ শুরুটা ভালো হলে অবশ্যই দলের জন্য ভালো। পুরো দলের তখন আত্মবিশ্বাস বেশি থাকবে। আশা করছি, ফ্ল্যাট উইকেট হবে। তবে যে উইকেটই পাই, আমাদের সেরাটি দিতে হবে।’

সব শেষ মাশরাফি বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেটারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যতটা সম্ভব স্বাভাবিক থাকার। তাহলে আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারব। যদি সমস্ত প্রত্যাশা ও সমস্ত কথা শুনে মাঠে ঢুকি, তাহলে আমাদের জন্য তা অনেক বেশি চাপ হবে।’

এদিকে দারুণ ছন্দে থেকে বিশ্বকাপ খেলতে নামছেন বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের এক্স-ফ্যাক্টর হতে পারেন। সব্যসাচী এ ক্রিকেটার বড় মঞ্চে বিশেষ কিছু করার জন্য মুখিয়ে আছেন। এজন্য নিজেকে সবদিক থেকে প্রস্তুত রেখেছেন। ত্রিদেশীয় সিরিজে ব্যাটিং বোলিং ফিল্ডিং তিন বিভাগেই দারুণ ছন্দে ছিলেন সাকিব।

সাকিবের এটি চতুর্থ বিশ্বকাপ, হতে পারে তার শেষ বিশ্বকাপও। সেদিক থেকে ‘গ্রেট শো ক্রিকেট’ বিশ্বকাপে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাকিব যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন, তা না বললেও চলে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সাকিবের ৫৪০। অথচ বৈশ্বিক এ টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত একটিও সেঞ্চুরি নেই তার। আরাধ্য সেঞ্চুরিটা এবার পেতে চাইবেন এ বাঁহাতি। ফিট থাকলে টুর্নামেন্টের লীগ পর্বে নয়টি ম্যাচ খেলবেন তিনি। তবে আজই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটা রেকর্ডের হাতছানি পাচ্ছেন দেশসেরা এ ক্রিকেটার। আর এক উইকেট হলেই জ্যাক ক্যালিসদের সঙ্গে অলরাউন্ডারি ক্লাবের ‘এলিট’ সদস্য হবেন তিনি। পাঁচ হাজার রান ও আড়াইশ’ উইকেট হবে তার।

তাইতো বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার জানান, অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাটিং ও বোলিংয়ে অনেক শক্তিশালী। তাই বাংলাদেশের জন্য এবারের বিশ্বকাপ জয়ের দারুণ সুযোগ রয়েছে।

সাকিব মনে করেন, যে কোনও দল যে কাউকে হারিয়ে দিতে পারে। ভারত-ইংল্যান্ড অবশ্যই ফেভারিট। তবে ফেভারিট হলেই শিরোপা পাওয়া যায় না। এ জন্য কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়।

সাকিব আরও বলেন, অস্ট্রেলিয়া সম্প্রতি ভালো খেলছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সঠিক সময়ে ছন্দ খুঁজে পেয়েছে। সত্যি কথা বলতে, সব দলই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। বিষয়টি নির্ভর করবে কোন দিন কে কেমন খেলে তার ওপর।

টাইগারদের আত্মবিশ্বাসের আরও অনেক কারণ রয়েছে। কারণ অনেক দিক থেকেই ১৯৯২ বিশ্বকাপ ছিল চমক জাগানিয়া। তবে আলো ঝলমলে আসরের সবচেয়ে বড় চমকের নাম ছিল পাকিস্তান।

ওই আসরে পরিষ্কার ফেভারিট ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে যেভাবে শিরোপা জিতেছিল ইমরান খানের দল, তা চিরস্থায়ী জায়গা পেয়ে গেছে ক্রিকেটীয় রূপকথায়।

বিদায়ের দুয়ারে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান। সেই ম্যাচ থেকেই অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান।

এছাড়া, ক্রিকেটের মানচিত্রেই বড় একটা ওলট-পালট হয়ে যায় ১৯৯৬ সালে। ক্রিকেট বিশ্বকে বিস্ময়ে ডুবিয়ে অর্জুনা রানাতুঙ্গার শ্রীলঙ্কা ভাসে বিশ্বজয়ের উৎসবে। বিশ্বকাপের ওই ষষ্ঠ আসরে প্রথমবারের মতো তিন দেশে বসে বিশ্বসেরার আসর। ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে শ্রীলঙ্কাও ছিল অন্যতম আয়োজক।

মাঝেমধ্যে অঘটনের জন্ম দেওয়া, কখনও লড়াই করা, আর বেশিরভাগ সময় পড়ে থাকা তলানিতে, বিশ্ব ক্রিকেটে এই ছিল শ্রীলঙ্কার পরিচয়। কিন্তু একটি টুর্নামেন্ট পাল্টে দেয় চিত্র। আর শুধু চ্যাম্পিয়ন হওয়াই নয়, লঙ্কানদের আগ্রাসী ও বিনোদনদায়ী ক্রিকেট রাঙিয়েছিল বিশ্বকাপ। ওয়ানডে ক্রিকেটের ঘরানায় যোগ করেছিল নতুন মাত্রা।

তবে যাইহোক, টাইগারদের অধিনায়ক মাশরাফি বলেন, গত চার বছর ধরেই আমরা ভালো করছি। এই বিশ্বকাপে শুরুটা ভালো চাই। কারণ শুরুটা ভালো হলে আত্মবিশ্বাসটাও বেড়ে যায়। বড় আসরে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুরুটা ভালো হলে নির্ভর করা যাবে আমরা কতদূর যেতে পারবো। প্রথম ম্যাচেই আমাদের প্রতিপক্ষ কিন্তু ফাফ ডু প্লেসিসের দল। সুতরাং এই ব্যাপারে আমাদের বেশ সতর্ক থাকতে হবে।

বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ : 

তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন, সাব্বির রহমান/মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মুর্তাজা (অধিনায়ক), মুস্তাফিজুর রহমান এবং রুবেল হোসেন।

দক্ষিণ আফ্রিকা সম্ভাব্য একাদশ :

হাশিম আমলা, কুইন্টন ডি কক (উইকেটরক্ষক), রসি ভ্যান ডার ডুসেন, ফাফ ডু প্লেসিস (অধিনায়ক), এইডেন মার্করাম, জেপি ডুমিনি, ডেভিড মিলার, আন্দিলে ফিকোয়াও, কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি ও ইমরান তাহির।

এমএইচ/এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.





© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি