রিশাদের ঘূর্ণিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭৪ রানে হারালো বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ২০:৫৭, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

স্বল্প পুঁজি নিয়েও বড় জয় পেলো বাংলাদেশ। রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণিতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭৪ রানে হারালো মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের সংগ্রহ থামে ২০৭ রানে। জবাবে ৩৯ ওভার খেলে ১৩৩ রানে অলআউট হয়ে যায় সফরকারীরা।
বল হাতে ৯ ওভারের স্পেলে ৩৫ রানে ৬ উইকেট নেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান পাঁচ ওভারে ১৬ রানে দুই এবং ১০ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৬ রানে এক উইকেট নেন অফস্পিনার মিরাজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন ওপেনার ব্রেন্ডন কিং। অপর ওপেনার আথানেজ করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ রান। ক্যারিবীয়দের ইনিংসে এক অঙ্কের রানে সাজঘরে ফেরেন ৭ ব্যাটার।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ওপেনার ব্রেন্ডন কিং আর অলিক আথানাজে তোলেন ৫১ রান। অবশেষে ১২তম ওভারে রিশাদ হোসেন এলবিডব্লিউ করেন আথানাজেকে (২৭)।
ক্রিজে এসে ধরে খেলতে থাকেন কিয়েসি কার্টি। যদিও কাজ হয়নি। রিশাদের ঘূর্ণিতে স্লিপে সাইফ হাসানকে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাকে। ৩০ বল খেলে করেন ৯ রান।
এরপর ইনিংসের ২২তম ওভারে জোড়া শিকার করেন রিশাদ। সেট ব্যাটার ব্রেন্ডন কিং ৬৬ বলে ৪৪ আর শেরফান রাদারফোর্ড শূন্য করেই হন উইকেটরক্ষক সোহানের দারুণ দুটি ক্যাচ। ১ উইকেটে ৭৯ থেকে ৪ উইকেটে ৮২ রানে পরিণত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অর্থাৎ ৩ রানের মধ্যে হারায় ৩ উইকেট।
রিশাদ তার পঞ্চম শিকার বানান রস্টন চেজকে (৬)। যে কোনো ফরম্যাটের ক্যারিয়ারে এটিই তার প্রথম ফাইফার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ষষ্ঠ উইকেটটি নেন মিরাজ। গুদাকেশ মোতিকে (৩) এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১০০ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে ক্যারিবীয়রা। এরপর শেষ ভরসা শাই হোপকেও (১৫) তুলে নেন তানভীর।
এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর বেশিদূর এগোতে পারেনি। ৩৯ ওভারে ১৩৩ রানে থামে ক্যারিবীয়দের ইনিংস।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাউন্ডারিসহ ৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। তবে সেই শুরু বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি। দ্বিতীয় ওভারেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন সাইফ হাসান। ইনফর্ম এই ওপেনার ৬ বল খেলে ৩ রানের বেশি করতে পারেননি।
পরের ওভারেই ফিরেছেন সৌম্য সরকারও। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন জেইডেন সিলস। সেখানে জায়গায় দাঁড়িয়ে কভার পয়েন্টের উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন সৌম্য। টাইমিং না হওয়ায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে রোস্টন চেজের হাতে ধরা পড়েন। এই ওপেনারের ব্যাট থেকে এক চারে ৬ বলে ৪ রান এসেছে।
৮ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহিদ হৃদয়। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৭১ রান। ৩২ রান করে শান্ত ফিরলে ভাঙে সেই জুটি।
শান্ত থিতু হয়ে ফিরলেও ব্যক্তিগত ফিফটি পেয়েছেন হৃদয়। এই মাইলফলক ছুঁতে ৮৭ বল খেলেছেন তিনি। কিছুটা ধীরগতির ব্যাটিং করলেও উইকেট বিবেচনায় হৃদয়ের এই ইনিংস কার্যকরী ছিল। ফিফটির পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। সবমিলিয়ে ৯০ বলে করেছেন ৫১ রান।
হৃদয়ের পর দায়িত্ব নিয়ে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেছেন অঙ্কন। অভিষিক্ত এই উইকেটকিপার ব্যাটার ফিফটির কাছাকাছি গিয়ে আউট হয়েছেন। ইনিংসের ৪৬তম ওভারে রোস্টন চেইজকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন। তার আগে ৭৬ বলে করেছেন ৪৬ রান।
অঙ্কন ফেরার পর দুইশ’ স্পর্শ করা নিয়েও শঙ্কা জেগেছিল। তবে শেষদিকে রীতিমতো ঝড় তোলেন রিশাদ হোসেন। এক চার আর দুই ছক্কায় ১৩ বলে ২৬ রান করেছেন তিনি। তাতে দুইশ’ ছুঁয়েছে বাংলাদেশ।
এএইচ