ঢাকা, সোমবার   ০৭ জুলাই ২০২৫

মুশফিক-মিরাজ ঝড়ে উড়ে গেল চ্যাম্পিয়নরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:৩২, ১০ জানুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ০০:০৩, ১১ জানুয়ারি ২০২০

মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহিম

মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহিম

Ekushey Television Ltd.

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কোনও দলের সংগ্রহ যখন দুশো ছাড়ায়, তখন আসলে রান তাড়া করে জেতাটা দুঃসাধ্য হয়ে যায়। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের ক্ষেত্রেও হলো তেমনটাই, কিছুই করতে পারেনি দলটি। খুলনা টাইগার্সের কাছে স্রেফ অসহায় আত্মসমার্পন করেছে তারা। আসলে, ম্যাচটার ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায় প্রথম ইনিংসেই।

শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১২৬ রান তুলেতে পারে কুমিল্লা। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের ৯২ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে খুলনা। 

ম্যাচটা জিতলেও অবশ্য প্লে-অফের টিকিটের জন্য জটিল সমীকরণের মুখোমুখি হতে হতো কুমিল্লাকে। সেই জটিলতার পথে আর হাঁটতে হলো না তাদের। কোনও ধরনের ঝামেলা ছাড়াই বিদায় নিল গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।

বিশাল ব্যবধানে হেরে এবারের আসরের শেষ চারের লাইনআপ নিশ্চিত করে দিল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। আর এই জয়ে ১৪ পয়েন্ট পেলেও রান রেটে দুয়ে উঠে গেল খুলনা। আর প্লে-অফ পর্বে উঠল শীর্ষ চার দল- চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স (১৬), খুলনা টাইগার্স (১৪), ঢাকা প্লাটুন (১৪) ও রাজশাহী রয়্যালস (১৪)। 

এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি শীর্ষে চ্যালেঞ্জার্স। আর সমান ১১ ম্যাচে সমান ১৪ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে খুলনা, ঢাকা ও রাজশাহী। রবিন লিগ রাউন্ডে চারটি দলেরই বাকি আছে আরও একটি করে ম্যাচ। যা অনুষ্ঠিত হবে কাল শনিবার।

যাইহোক, এদিন ২১৯ রানের হিমালয়তুল্য লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধসে পড়ে কুমিল্লার ব্যাটিং অর্ডার। দলীয় ৩২ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরে গেছেন সাব্বির রহমান, স্টিয়ান ফন জিল ও ডেয়িড মালান। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ রান করেছেন ওপেনার ফন জিল। শুরুর বিপর্যয় আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি কুমিল্লা।

একপ্রান্ত আগলে রেখে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন লঙ্কান রিক্রুট উপুল থারাঙ্গা। তাও গুঁড়িয়ে গেছে খানিক বাদেই। ২৩ বলে ছয়টি চারে ৩২ রানে সাজঘরে ফিরে গেছেন লঙ্কান তারকা। আর সৌম্য সরকার ফিরেছেন একটু পরই। আজ ১৭ বলে ১০ রানের মন্থর ইনিংস খেলেই সাজঘরে ফেরেন এই বাঁহাতি।

পরে মিডল লোয়ার অর্ডার দুই ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলি ও ফারদিন হাসানের সৌজন্যে কোনও রকম দলীয় সংগ্রহ তিন অংক ছুঁয়েছে কুমিল্লার। তাতে হারের ব্যবধানও কমে এসেছে শতরানের নিচে। খুলনার এই বড় জয়ে সবচেয়ে সফল বোলার শহিদুল ইসলাম নিয়েছেন তিনটি উইকেট। দুটি শিকার মোহাম্মদ আমিরের।

তবে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিমই। খুলনা টাইগার্সের জয়ের ভিতটা যে আগেই গড়ে দিয়েছেন তিনি। খেললেন অধিনায়কোচিত ঝড়ো ইনিংস। ৫৭ বলে ৯৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে অবধারিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন মুশফিক। কিন্তু শতক না পাওয়ার আক্ষেপটা ঠিকই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাকে।
 
মুশিকে আউট করতে পারেননি কুমিল্লার বোলাররা। ঝড় তোলা আরেক ব্যাটসম্যান মেহেদি হাসান মিরাজও আউট হননি এদিন। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট পেয়ে কোচিং স্টাফদের কোলে চড়েই বাইশ গজ ছেড়েন মিরাজ। ফেরার আগে ৪৫ বলে ৭৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেছেন এই অলরাউন্ডার।

মিরাজ রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে সাজঘরে ফিরতেই বিচ্ছিন্ন হয় তৃতীয় উইকেটে খুলনার ১৬৮ রানের জুটিটা। অথচ এই জুটি মুশফিক-মিরাজ শুরু করেন বিপর্যয়ের ওপর দাঁড়িয়ে। ম্যাচ শুরুর চতুর্থ বলেই আউট হয়ে যান ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। দলীয় ৩৩ রানে হয় দ্বিতীয় উইকেটের পতন।

১১ বলে তিন ছক্কায় ২৪ রানে সাজঘরে ফিরে যান দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩৫ রান করা রান মেশিন রাইলি রুশো। এরপরই শুরু হয় মুশফিক ও মিরাজ তাণ্ডব। ঝড় উঠল দুজনের ব্যাটেই। জাতীয় দলের দুই তারকা রীতিমতো কচুকাটা করলেন কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স বোলারদের। দুজনকে আর থামাতে পারেনি কুমিল্লা। মিরাজ-মুশফিক টর্নোডোতে খুলনা করল দুই উইকেটে ২১৮!

ঝড়ো ইনিংসে পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কার মেরেছেন মিরাজ। হলেন ম্যাচের পার্শ্বনায়ক। দুই রানের জন্য শতক হাতছাড়া করা মুশি ইনিংসের শেষ বলে ফুলটসটা কাজে লাগাতে পারেনি। রাজ্যের হতাশা নিয়ে মুশি যখন বাইশ গজ ছাড়ছিলেন তখন দৌড়ে এসে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে গেলেন কুমিল্লার ক্রিকেটাররা।
 
শেষ ওভারে স্ট্রাইক বদল করেই ভুলটা করেছিলেন মুশফিক। সেটার খেসারত দিতে হলো স্বপ্নের প্রথম শতক হাতছাড়া করে। ৫৭ বলের বিস্ফোরক ইনিংসে ১২টি চার ও তিনটি ছক্কা মেরেছেন খুলনা অধিনায়ক। শতক না পাওয়া মুশফিক পেলেন ম্যাচ সেরার সান্ত্বনার পুরস্কার। সেইসঙ্গে চার ফিফটিতে ৪৩১ রান সংগ্রহ করে উঠে এসেছেন তৃতীয় স্থানে। সর্বোচ্চ ৪৪৪ রান নিয়ে শীর্ষে আছেন ডেয়িড মালান।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি