ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪

পাকিস্তানে ঐতিহাসিক জয়ে উচ্ছ্বসিত কামিন্স

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৮, ২৬ মার্চ ২০২২

প্যাট কামিন্স

প্যাট কামিন্স

দীর্ঘ ২৪ বছর পর পাকিস্তান সফরে খেলতে এসেই তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জয় করল অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ দিনে দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বড় জয়ে রীতিমত উচ্ছ্বসিত দলটির অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ঘরের মাঠে দুর্দান্ত প্রতাপে অ্যাশেজ জয়ের কয়েক মাসের মধ্যে পাকিস্তানের ডেরায় ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে রোমাঞ্চিত কামিন্স। 

রাওয়ালপিণ্ডি ও করাচিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম দুই টেস্ট ড্র হয়। তবে লাহোর টেস্ট জয়ে সিরিজ নিশ্চিতের ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়া কামিন্স বলেন, ‘আমি মনে করি, দলের সবাই অনেক বেশি উচ্ছ্বসিত। ঘরের মাঠে অ্যাশেজ জয় এবং বিদেশে জয় সব সময় হয় না।’

চলতি বছরের জানুয়ারিতেই চির প্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের অ্যাশেজ সিরিজ ৪-০ ব্যবধানে জিতে পাকিস্তানের মাটিতে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। 

সিরিজের শেষ টেস্টে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়া কামিন্স আরও বলেন, ‘গত ২৫ থেকে ৩০ দিনের জন্য এটি ছিল সত্যিকারের পরিশ্রম এবং এখানে আসাটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য ছিল সম্পূর্ণ আলাদা, সঙ্গে ভিন্ন কন্ডিশনও।’

কামিন্স আরও বলেন, ‘সবকিছুই ছিলো চমৎকার, অনেক উপভোগ্য।

শুক্রবার লাহোর টেস্টে ১১৫ রানের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিনার নাথান লায়ন ৮৩ রানে ৫ উইকেট নেন। আর কামিন্স নেন ২৩ রানে ৩ উইকেট।

জয়ের জন্য পাকিস্তানকে ৩৫১ রানের টার্গেট দেয় অস্ট্রেলিয়া। মাত্র ২২ রানে শেষ পাঁচ উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকদের ইনিংস। অথচ চতুর্থ দিন শেষে বিনা উইকেটে ৭৩ রান তুলেছিল পাকিস্তান।

যা নিয়ে অবশ্য চিন্তায় পড়ে যায় দুঃসাহসিকতার পরিচয় দেয়া কামিন্স এন্ড কোং। প্যাট বলেন, ‘আমি মনে করি, আগের দিন এক বা দু’টি উইকেট শিকার করতে পারলে ভালো হতো।’

অজি অধিনায়ক আরও বলেন, ‘প্রথম ৩০ থেকে ৪০ ওভারে নতুন বলে টপ-অর্ডারের উইকেট পাওয়া কঠিন ছিল। কিন্তু বল নরম হয়ে যাওয়ায় এটি রির্ভাস সুইংয়ের সুবিধা দিয়েছে। আমি জানতাম, প্রতি ওভারে তিন রানের কাছাকাছি করতে হলে ভিন্নধর্মী ব্যাট করতে হবে (পাকিস্তানকে)।’

পাকিস্তানের ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিককে ২৭ এবং আজহার আলীকে ১৭ রানে তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের পথ দেখান লায়ন ও কামিন্স। এরপর শেষ দুই সেশনে পাকিস্তানকে গুটিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া।

১৯৯৮ সালের পর প্রথমবারের মতো পাকিস্তান সফরে অস্ট্রেলিয়া। নিরাপত্তার কারণে অতীতে পাকিস্তান সফরে আগ্রহী ছিল না দলটি। তবে গত কয়েক বছরে পাকিস্তানে নাটকীয়ভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনের মাত্রা বাড়িয়েছে তারা।

এদিকে, প্রথমবার পাকিস্তান সফরে এসেই সিরিজের সেরা খেলোয়াড় হন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বাঁহাতি ওপেনার উসমান খাজা। দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে জন্মগ্রহণ করেন খাজা। চার বছর বয়সে পাকিস্তান ছেড়ে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান খাজার বাবা-মা। এবারের সফরটি দারুণভাবে উপভোগ করেছেন তিনি।

সিরিজে ২টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরিতে ৪৯৬ রান করা উসমান বলেন, ‘আমি পাকিস্তান এবং তাদের সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা একটি দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছি। সবাই অনেক আন্তরিকতা দেখিয়েছে।’

ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রক্ষণাত্মক ক্রিকেট খেলারর কারণেই হার বরণ করতে হয় পাকিস্তানকে। কিন্তু এটি মানতে রাজি নন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। 

তিনি বলেন, ‘ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ীই আমাদের পরিকল্পনা ছিল। শেষ দিনে আমরা প্রথম সেশনটা ভালো খেলেছি, কিন্তু আমাদের দু’টি উইকেট সফট ডিসমিসাল ছিল এবং এটাই আমাদের সর্বনাশ করে।’

পাকিস্তানের পক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ইমাম-উল-হক ৭০ এবং বাবর ৫৫ রান করেন। অধিনায়ক আরও বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য তাড়া করতে চেয়েছি। এটা বলা সঠিক নয়, আমরা রক্ষণাত্মক খেলেছি। আমরা ভালো লড়াই করেছি কিন্তু শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াই ভালো দল হিসেবে প্রমাণ করেছে।’

এদিকে, আগামী ২৯ মার্চ থেকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করবে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে লড়াই শেষে ৫ এপ্রিল সফরের একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দল দুটি।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি